একই পরিবারের ৪ ভাই বুয়েট পড়ুয়া

 একই পরিবার থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছেন চার ভাই। সর্বশেষ গত মাসে চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাই বুয়েটে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

                                              একই পরিবারের ৪ ভাই বুয়েট পড়ুয়া


বুয়েট পড়ুয়া চার ভাই হলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের হাসান মনির, হাসান মুরাদ, হাসান মাসুম ও সবার ছোট হাসান মামুন। এর মধ্যে দুই ভাই বুয়েট থেকে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করছেন। তাঁদের বাবা আমিনুর রহমান একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।


এর আগে এই চার ভাই চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। গত ৩০ জুন বুয়েটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। সেখানে সবার ছোট ভাই হাসান মামুন মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছেন।


মুঠোফোনে হাসান মামুন বলেন, 'বুয়েটের সঙ্গে আমাদের পরিবারের পরিচয় ২০০৯ সালে। যখন আমার বড় ভাই হাসান মনির সুযোগ পান। তখন ভাইয়ার ভর্তির সময় আমরা সবাই ঢাকা যাই। ভাইয়ার ভর্তির দিন বুয়েটের সামনে এক আন্টির সঙ্গে আম্মু যখন কথা বলছিল, তখন ওনার একটা কথা এখনো মনে পড়ে। কথাটি ছিল এমন, ‘ছোটরা বড়দের পথেই যায়।’ আন্টির কথাটা কথার কথা হলেও আজ ওই কথাটা সত্যি হলো। বড় ভাইকে অনেক কষ্ট করতে দেখেছি, তখন এত কষ্ট করে ভাইয়ার মতো হওয়ার কথা ভাবতেই ভয় লাগত।'

হাসান মামুন আরও বলেন, 'আমার আব্বু-আম্মু নিজেরা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পাননি। কিন্তু এমন একটা গ্রাম থেকে ওনারা আমাদের এত দূর আনার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, আমরা সবাই গর্বিত ওনাদের স্বপ্ন বাস্তব করতে পেরে।'


বুয়েটিয়ান চার ভাইয়ের বাবা আমিনুর রহমান রাঙ্গুনিয়ার মরিয়মনগর কাটাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, ' চার ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মনির বুয়েটে পড়ালেখা শেষে ঢাকার একটি সরকারি ইনস্টিটিউটে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেয়। মেয়ে আয়শা সুলতানা ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক। ছেলে মুরাদ চুয়েটের (চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) কম্পিউটার বিভাগের প্রভাষক। মাসুম বুয়েটে পড়ছে। এবার মামুন সুযোগ পেয়েছে। ছোট মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। তিন ছেলের পর ছোট ছেলেও বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়ে আমরা খুব খুশি।’


এবার বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে হাসান মামুন বলেন, 'বুয়েটে পরীক্ষা দেওয়ার পর একটা চাপ ছিল টিকব কি না। সুযোগ পেয়ে চাপ থেকে মুক্ত হলাম। তিন ভাইয়ের মতো আমারও স্বপ্ন ছিল বুয়েটে পড়ার। কঠোর পরিশ্রম করেছি, সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ভালোভাবে পড়াশোনা করলে কাঙ্ক্ষিত স্থানে ভর্তির সুযোগ পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়।'

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post