সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নাম মনে রাখার কৌশল

 সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নাম মনে রাখার কৌশল


১৯৭১ সালের সাত জন বীরশ্রেষ্ঠের নামের তালিকা এবং পরিচয়। বীর শ্রেষ্ঠ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদক। যুদ্ধক্ষেত্রে অতুলনীয় সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী যোদ্ধার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেয়া হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক দেয়া হয়েছে ।

সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের পরিচিতি

গুরুত্বের ক্রমানুসারে বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের অন্যান্য সামরিক পদক হল – বীর উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরই এই পদকগুলো দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের একটি অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়।



০১। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর

জন্ম : ৭ মার্চ ১৯৪৯। জন্মস্থান : বাবুগঞ্জ, বরিশাল, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানঃ বাংলাদেশ)। পড়াশোনা : ১৯৬৪ সালে মুলাদি মাহমুদ জান পাইলট হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং ১৯৬৬ সালে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পিতার নাম : আব্দুল মোতালেব হাওলাদার ছিলেন কৃষক মাতার নাম : মা সাফিয়া বেগম ছিলেন গৃহিণী।
পদমর্যাদা : ক্যাপ্টেন,৭নং সেক্টর-এর মহোদিপুর সাব-সেক্টর। মৃত্যু : ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ বারঘরিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। পুরস্কার : বীর শ্রেষ্ঠ।

০২। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান

জন্ম : ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩। জন্মস্থান : যশোর জেলার (বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলা) মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে। পড়াশোনা : শৈশবে তিনি খালিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরবর্তীকালে স্থানীয় নাইট স্কুলে সামান্য লেখাপড়া করেন।

পিতার নাম : আক্কাস আলী মন্ডল। মাতার নাম : মোসাম্মাৎ কায়মুন্নেসা। পদমর্যাদা : ৪নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন (সৈনিক নাম্বার ৩৯০৪৩০১)। মৃত্যু : অক্টোবর ২৮, ১৯৭১ ধলই, শ্রীমঙ্গল, সিলেট। পুরস্কার : বীর শ্রেষ্ঠ।

০৩। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল

জন্ম : ১৬ ডিসেম্বর ১৯৪৭ । জন্মস্থান : ভোলা জেলার দৌলতখান থানার পশ্চিম হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা : পড়াশোনা বেশিদূর করতে পারেননি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর উচ্চ বিদ্যালয়ে দু-এক বছর অধ্যয়ন করেন। পিতার নাম : হাবিবুর রহমান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার।
পদমর্যাদা : ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কুমিল্লায়,সেক্টরঃ ২ নং। মৃত্যু : এপ্রিল ১৭, ১৯৭১ আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, বাংলাদেশ । পুরস্কার : বীর শ্রেষ্ঠ।

০৪। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন

জন্ম : ১৯৩৫ সালের জুন মাস। জন্মস্থান : জেলা: নোয়াখালী,উপজেলা: সোনাইমুড়ি, গ্রাম: বাঘপাঁচড়া। পড়াশোনা : বাঘচাপড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে আমিষাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এসএসসি পাশ করে ১৯৫৩ সালে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগদান করেন।
পিতার নাম : আজহার পাটোয়ারী। মাতার নাম : জোলেখা খাতুন। পদমর্যাদা : স্কোয়াড্রন ইঞ্জিনিয়ার, ১০নং সেক্টর। মৃত্যু : ১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সাল। পুরস্কার : বীর শ্রেষ্ঠ।

০৫। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেঃ মতিউর রহমান

জন্ম : ২৯ অক্টোবর ১৯৪১। জন্মস্থান : পুরান ঢাকার ১০৯, আগা সাদেক রোডের “মোবারক লজ”-এ। পড়াশোনা : ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পাস করার পর সারগোদায় পাকিস্তান বিমান বাহিনী পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ডিস্টিংকশনসহ মেট্রিক পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পিতার নাম : মৌলভী আবদুস সামাদ। মাতার নাম : সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন।
পদমর্যাদা : ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট,নম্বর. ২ স্কোয়াড্রন। মৃত্যু : ২০ আগস্ট ১৯৭১ (বয়স ২৯) থাট্টা, পশ্চিম পাকিস্তান। পুরস্কার : বীর শ্রেষ্ঠ।

০৬। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ

জন্ম : ১ মে, ১৯৪৩। জন্মস্থান : জেলা: ফরিদপুর, উপজেলা: মধুখালী, গ্রাম: সালামতপুর। পড়াশোনা : ১৯৫৫ সালে তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তিনি বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারেন নি। সংসারের হাল ধরতে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ১৯৬৩ সালের ৮ মে আব্দুর রউফ যোগ দেন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসে। পিতার নাম : মুন্সি মেহেদি হাসান ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। মাতার নাম : মুকিদুন্নেসা।
পদমর্যাদা : ল্যান্স নায়েক। সেক্টরঃ ১ নং। মৃত্যু : ৮ এপ্রিল, ১৯৭১ বুড়িঘাট, মহালছড়ি। পুরস্কার : বীর শ্রেষ্ঠ।

০৭। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ

জন্ম : ২৬শে ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬। জন্মস্থান : যশোর জেলার অর্ন্তঃগত নড়াইল মহকুমার মহিষখোলা গ্রামে।পড়াশোনা : স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সপ্তম শ্রেণীর পর আর পড়াশোনা করেননি।
পিতার নাম : মোহাম্মদ আমানত শেখ। মাতার নাম : জেন্নাতুন্নেসা। পদমর্যাদা : ল্যান্স নায়েক , কর্মস্থলঃ ইপিআর । সেক্টরঃ ৮ নং। মৃত্যু : ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ (বয়স ৩৫) গোয়ালহাটি, যশোর। পুরস্কার : বীর শ্রেষ্ঠ।

আমরা অতি সহজে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ সন্তানদের নাম ঠিকানা ও পদমর্যাদা পুরস্কার সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনার যদি পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। জেনে রাখুন করবেন কিন্তু বুঝে বুঝে পড়তে। 7 জন বীরশ্রেষ্ঠের নাম মনে রাখার সহজ কৌশল।


إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم