এলিসরা শিখছেন, অস্ট্রেলিয়ার আশা এখন ৩-২
কয়েকজন ক্রিকেটার নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার পর ‘রিজার্ভ’ হিসেবে ডাকা হয়েছিল নিউ সাউথ ওয়েলসে জন্ম নেওয়া তাসমানিয়ান পেসারকে। পরে রাইলি মেরিডিথের চোটে চলে এলেন মূল স্কোয়াডে।
সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মিচেল স্টার্কের হালকা চোটের কারণে সুযোগও পেয়ে গেলেন মূল একাদশে। প্রথম ২১টা বল এলিসের জন্য যদি হয় বাস্তবতা, তাহলে পরের তিনটি স্বপ্ন! অভিষেকে যে হ্যাটট্রিকই পেয়ে গেছেন ২৬ বছর বয়সী পেসার!
তবে দল হিসেবে দিনটা শেষ পর্যন্ত নিজেদের করে নিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। প্রথম তিন ম্যাচই হেরে বাংলাদেশের কাছে প্রথমবারের মতো সিরিজ হেরে বসেছে তারা। এলিস বলছেন, এ সফরটা একদিকে যেমন পরাবাস্তব অনুভূতি, অন্যদিক দিয়ে তাঁর মতো অনভিজ্ঞ তরুণের জন্য শেখার একটা বড় সুযোগও। প্রথম তিন ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সিরিজের ফলটা ৩-২ করারও ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিন ম্যাচে পরও এখনও যেন এ উইকেটে ব্যাটিংয়ের সুরটা ধরতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। বোলিংয়ে ভালো করলেও বাংলাদেশের আক্রমণের কাছে ম্লান হয়ে গেছে তাদের বোলিং আক্রমণ।
এলিস বলছেন, বাংলাদেশ বোলাররা যেভাবে কন্ডিশন কাজে লাগিয়েছেন, সেটি দারুণ, ‘তারা এখানে বড় হয়েছে। আমি বলব, ট্যাকটিক্যালি তারা আমাদের চেয়ে বেশি প্রস্তুত। তাদের পারফরম্যান্সকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখছি না আমি, পুরো সফরজুড়েই তারা কন্ডিশনকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে। আমাদের তরুণ দলের জন্য প্রতিটা দিনই শেখার সুযোগ। এখান থেকে যাতে শিখতে পারি।'
এর আগে বাংলাদেশ দূরে কথা, উপমহাদেশের কন্ডিশনেই কখনো খেলেননি এলিস। এমন উইকেটে বোলিংয়ের ক্ষেত্রে তাই ‘বেসিক’টা ঠিক রাখতে চেয়েছেন তিনি, ‘উপমহাদেশের উইকেটে বোলিং করার অভিজ্ঞতা এই প্রথম হলো। আপাতত লক্ষ্য, ঠিকঠাক ফিল্ডিং সাজিয়ে যাতে ফিল্ডারদের কাছে যাতে বল যায় সেভাবে বোলিং করা। এভাবে দেখলে আসলে ব্যাপারটা সরল। আশা করি সবকিছু আমার পক্ষে যাবে।’
গতকাল তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়ায় ৬ উইকেট হাতে রেখেও বাংলাদেশের ১২৭ রান টপকাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। এখন পর্যন্ত এ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের একমাত্র উজ্জ্বল দিক মিচেল মার্শ। তবে তিনিও কাল পার করাতে পারেননি অস্ট্রেলিয়াকে।
এখানেও শেখার কথাই বলছেন এলিস, ‘উইকেট হাতে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি কখনো উপমহাদেশের উইকেটে খেলিনি, আমাদের দলটা তরুণ। ফলে এই সিরিজটা সবার জন্যই শেখার সুযোগ। কার জন্য কোন পদ্ধতি কাজে আসে সেটা বাজিয়ে দেখার সুযোগ। মিচেল মার্শ ব্যাটিংয়ের ‘ব্লু প্রিন্ট’ ঠিক করে দিয়েছে। আজ জয়ের খুব কাছে গিয়েছিলাম আমরা। তবে শেষ পর্যন্ত ফলটা আমাদের পক্ষে যায়নি। দুটো ম্যাচ আছে, আশা করি (সিরিজের ফল) ৩-২ করতে পারব।’
শেখার কথা বললেও, দল হারলেও এই অভিজ্ঞতাটা যে এলিস উপভোগ করছেন, সেটি না বললেও চলে, ‘সত্যি বলতে, সবকিছুই কেমন চোখের পলকে ঘটে গেছে। ২০ ওভারই যেন একশ মাইল গতিতে এগিয়েছে। কেমন পরাবাস্তব কিছু। হ্যাটট্রিক পাওয়া...স্বপ্নেও ভাবি নি। সবসময় মনে থাকবে এটা। আসলে পুরোটাই পরাবাস্তব মনে হচ্ছে। পুরো সফরটাই। পরাবাস্তব মুহুর্ত। যাঁদের দেখে বড় হয়েছি, যাঁদের মতো হতে চেয়েছি, তাঁদের সঙ্গে খেলছি।‘
এলিসের কাছে ব্যাপারটা ঘুরেফিরে তাই শেখার একটা ধাপই, ‘এ সফর নিয়ে কোনো পরিকল্পনাই ছিল না আমার। মহামারির কারণে অনেকেই বিরতি নিয়েছে, ফলে আমার সুযোগ এসেছে। তবে আমি সৌভাগ্যবান। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ও কোচ আছে। প্রতি নেট সেশন, মিটিং, ম্যাচ - সবকিছুই আমার জন্য শেখার সুযোগ। আমার এখন একেবারে নতুন অনুশীলনের কিট আছে - বাড়ি গিয়ে সবাইকে দেখাতে পারব।’
এলিস নিজের নামের পাশে অভিষেকে হ্যাটট্রিক নিয়েই বাড়ি ফিরবেন। ৩-২ ব্যবধানের ফলটা নিয়ে ফিরতে পারবে কি না অস্ট্রেলিয়া, সেটির প্রথম ধাপের উত্তর জানা যাবে আজ। সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টি আজ। শেষ ম্যাচটা আগামী পরশু।